✅ মার্ক জুকারবার্গের জীবনী

✅ মার্ক জুকারবার্গের জীবনী

May 25, 2025 - 00:58
 0  0
✅ মার্ক জুকারবার্গের জীবনী
সাল / সময়কাল ঘটনা / তথ্য
১৪ মে, ১৯৮৪ মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ জন্মগ্রহণ করেন নিউ ইয়র্কের হোয়াইট প্লেইনসে, যুক্তরাষ্ট্রে।
শৈশব নিউ ইয়র্কের ডবস ফেরিতে বেড়ে ওঠেন। পিতা ছিলেন একজন দন্তচিকিৎসক এবং মাতা মনোরোগ চিকিৎসক।
১৯৯০-এর দশক কম্পিউটারে আগ্রহ জন্মায়; BASIC প্রোগ্রামিং শেখেন এবং 'ZuckNet' নামে একটি চ্যাট সিস্টেম তৈরি করেন পরিবারের জন্য।
২০০০-২০০২ ফিলিপস একাডেমি (Phillips Exeter Academy)-তে পড়েন, লাতিন ও গ্রীক ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন।
২০০২ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন কম্পিউটার সায়েন্স ও সাইকোলজি নিয়ে।
২০০৩ ‘Facemash’ নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন যেখানে ছাত্রদের ছবি রেট করা হতো। এটা বিতর্ক সৃষ্টি করে এবং বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ ‘TheFacebook’ নামক সোশ্যাল নেটওয়ার্ক চালু করেন হার্ভার্ডের ছাত্রদের জন্য।
২০০৪ Facebook দ্রুত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
২০০৫ কোম্পানির নাম ছোট করে শুধু ‘Facebook’ রাখা হয় এবং venture capital থেকে বিনিয়োগ পেতে শুরু করে।
২০০৬ Facebook সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয় (১৩ বছরের বেশি যে কেউ একাউন্ট খুলতে পারে)।
২০০৭ মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি বিলিয়নিয়ার হয়ে ওঠেন; Facebook-এর মূল্য প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার হয়।
২০১০ টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে "Person of the Year" নির্বাচিত করে।
২০১২ ফেসবুক আইপিও (IPO) করে – এটি ইতিহাসের অন্যতম বড় টেক আইপিও। একই বছর প্রেমিকা প্রিসিলা চ্যানকে বিয়ে করেন।
২০১৫ তাঁদের প্রথম কন্যা মাক্সিমা চ্যান জুকারবার্গ জন্ম নেয়।
২০১৭ দ্বিতীয় কন্যা আগস্ট জুকারবার্গ জন্ম নেয়।
২০২১ ফেসবুক কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে ‘Meta Platforms Inc.’ রাখা হয়, মেটাভার্স প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে।
২০২২-২০২৪ মেটা-র অধীনে Facebook, Instagram, WhatsApp ও VR প্রজেক্টগুলো পরিচালনা অব্যাহত রাখেন।
বর্তমান (২০২৫) বিশ্বের অন্যতম ধনী ও প্রভাবশালী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে বিবেচিত হন। বিভিন্ন দাতব্য কাজেও যুক্ত আছেন প্রিসিলা চ্যানের সঙ্গে মিলে।

🔰 ভূমিকা

মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ আধুনিক যুগের অন্যতম প্রভাবশালী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিপ্লব ঘটানো ব্যক্তিত্ব। তিনি ফেসবুক নামক বিশ্বখ্যাত প্ল্যাটফর্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) হিসেবে পরিচিত, যা কোটি কোটি মানুষের জীবনযাত্রা ও যোগাযোগের ধরন সম্পূর্ণ পরিবর্তন করেছে। তরুণ বয়স থেকেই প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ তাঁকে প্রযুক্তি জগতের একজন কিংবদন্তি রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তার নেতৃত্বে ফেসবুক কেবল একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক নয়, বরং একটি বিশাল তথ্য ও যোগাযোগের ইকোসিস্টেমে পরিণত হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী মানুষের মতামত বিনিময়, ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনৈতিক গতিবিধিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। তাঁর জীবনী আধুনিক প্রযুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তনের এক অনন্য উদাহরণ।বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির যে বিপ্লব আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তার অন্যতম পথিকৃৎ হলেন মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগের জগতে এক নতুন যুগের সূচনা করেন। একাধারে তিনি প্রযুক্তি উদ্যোক্তা, সফটওয়্যার ডেভেলপার, এবং একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন করপোরেট নেতা। কম বয়সেই তিনি বৈশ্বিক প্রভাব ফেলেছেন, যা তাঁকে আধুনিক সময়ের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বে পরিণত করে

👶 জন্ম ও শৈশব

মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গের জন্ম হয় ১৯৮৪ সালের ১৪ মে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের হোয়াইট প্লেইনস শহরে। তিনি একজন মধ্যবিত্ত ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এডওয়ার্ড জুকারবার্গ একজন দক্ষ দন্তচিকিৎসক এবং মা ক্যারেন কেম্পনার একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই মার্ক ছিলেন একজন বিচক্ষণ ও সৃজনশীল মেধাবী ছেলে, যিনি প্রযুক্তি ও কম্পিউটার নিয়ে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি “ZuckNet” নামে একটি সহজ ম্যাসেজিং সফটওয়্যার তৈরি করেন, যা তাঁর পিতার দন্তচিকিৎসা অফিসে যোগাযোগের কাজে ব্যবহৃত হত। শৈশব থেকেই তিনি প্রোগ্রামিং ও কম্পিউটার সিস্টেমে দক্ষতা অর্জন শুরু করেন এবং নিজের আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে ছোট ছোট সফটওয়্যার তৈরিতে মনোনিবেশ করেন। তাঁর পরিবার ও শিক্ষকরা তাঁর প্রতিভা ও উদ্যোগকে উৎসাহিত করেন, যা ভবিষ্যতে তাঁর প্রযুক্তি-আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মজবুত ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ ১৯৮৪ সালের ১৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের হোয়াইট প্লেইনসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এডওয়ার্ড জুকারবার্গ একজন দন্তচিকিৎসক এবং মাতা ক্যারেন জুকারবার্গ একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই জুকারবার্গ প্রযুক্তি ও প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখান।

🎓 শিক্ষা জীবন

মার্ক জুকারবার্গের শিক্ষা জীবন শুরু হয় নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের আর্ডসলে শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছোটবেলা থেকেই তিনি লেখাপড়ায় মনোযোগী এবং প্রযুক্তি বিষয়ে কৌতূহলী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ভর্তি হন প্রভাবশালী প্রিপারেটরি স্কুল Phillips Exeter Academy-তে, যেখানে তিনি গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও ক্লাসিক্যাল ভাষায় (ল্যাটিন ও গ্রিক) দক্ষতা অর্জন করেন। এই সময়েই তাঁর প্রোগ্রামিং প্রতিভা উন্মোচিত হয় এবং তিনি একাধিক সফটওয়্যার তৈরি করেন, যার মধ্যে “ZuckNet” (যা তাঁর বাবার দন্তচিকিৎসা অফিসে ব্যবহৃত হতো) অন্যতম।

২০০২ সালে জুকারবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন, যেখানে তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং মনস্তত্ত্ব (Psychology) বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। হার্ভার্ডে অধ্যয়নকালেই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ধারণা নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন, যার ফলাফল ছিল ২০০৪ সালে ফেসবুকের জন্ম। যদিও ফেসবুকের দ্রুত সাফল্যের কারণে তিনি হার্ভার্ড থেকে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করতে পারেননি, তবুও ২০১৭ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করে, যা তাঁর শিক্ষা জীবনের একটি গৌরবময় পরিণতি হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ধাপেই প্রযুক্তি, চিন্তাশীলতা এবং উদ্ভাবনের বীজ ছিল, যা পরবর্তীকালে তাঁকে বিশ্বজয়ী প্রযুক্তি উদ্যোক্তায় রূপান্তরিত করে।

জুকারবার্গ তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন আর্ডসলে হাই স্কুলে এবং পরে ফিলিপস এক্সেটার একাডেমিতে ভর্তি হন, যেখানে তিনি উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পারদর্শিতা অর্জন করেন। পরে তিনি ২০০২ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও মনস্তত্ত্ব নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন।

ফেসবুকের জন্ম

ফেসবুকের জন্ম হয়েছিল এক সাধারণ ছাত্রাবস্থায়, কিন্তু তা বিশ্ব ইতিহাসে এক অসাধারণ প্রযুক্তি বিপ্লবের সূচনা করেছে। ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মার্ক জুকারবার্গ তাঁর সহপাঠীদের সহযোগিতায় “TheFacebook” নামে একটি অনলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক চালু করেন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করা, ছবি শেয়ার করা এবং প্রোফাইল তৈরি করা। সহ-প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন এডুয়ার্ডো সাভেরিন, ডাস্টিন মস্কোভিটজ, ক্রিস হিউজ এবং অ্যান্ড্রু ম্যাককলাম।

প্রথমে এটি কেবল হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ থাকলেও দ্রুতই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরে সাধারণ জনগণের মাঝে বিস্তৃত হয়। ২০০৫ সালে এর নাম সংক্ষিপ্ত করে Facebook রাখা হয় এবং এরপর থেকেই এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করে। ২০০৬ সালে ১৩ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ফেসবুকের এই দ্রুত উত্থান শুধু সামাজিক যোগাযোগের ধারণাকেই আমূল পাল্টে দেয়নি, বরং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সমাজ গঠনে এক গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে। বর্তমানে ফেসবুক শুধু একটি প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি কোটি কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ এবং একটি বৈশ্বিক তথ্য বিনিময় ও মতপ্রকাশের মাধ্যম হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।

হার্ভার্ডে অধ্যয়নকালে, ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, জুকারবার্গ সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে TheFacebook নামে একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু করেন। এটি প্রথমে কেবল হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু দ্রুতই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরে সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এর নাম পরবর্তীতে সংক্ষিপ্ত করে Facebook রাখা হয়।
২০০5 সালে তিনি হার্ভার্ড ত্যাগ করে পুরোপুরি ফেসবুকের ওপর মনোনিবেশ করেন।

নিশ্চয়ই। নিচে মার্ক জুকারবার্গের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত এবং পরিপূর্ণ "প্যারা" আকারে" অফিসিয়াল শৈলীতে উপস্থাপন করা হলো:


👩‍❤️‍👨 ব্যক্তিগত জীবন

মার্ক জুকারবার্গের ব্যক্তিগত জীবন শান্ত, সুসংগঠিত ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তিনি ২০০৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে প্রিসিলা চ্যানের সঙ্গে পরিচিত হন, যিনি সে সময় একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী ছিলেন। দীর্ঘদিনের সম্পর্কের পর তাঁরা ২০১২ সালের ১৯ মে নিজেদের বাড়িতেই ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান, সহযোগিতা এবং মানবিক মূল্যবোধে গঠিত। এই দম্পতির ঘরে বর্তমানে তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে, যাঁরা অত্যন্ত স্নেহ ও যত্নে বেড়ে উঠছে।

মার্ক ও প্রিসিলা কেবল সফল দম্পতি নন, তাঁরা সমাজসেবায়ও সক্রিয়ভাবে যুক্ত। ২০১৫ সালে তাঁরা যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা করেন “Chan Zuckerberg Initiative (CZI)”, যার লক্ষ্য হলো — শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বিজ্ঞান ও সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে বিশ্বের ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন করা। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের সম্পদের একটি বৃহৎ অংশ মানবকল্যাণে ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছেন। পারিবারিক জীবনে জুকারবার্গ একজন দায়িত্বশীল পিতা এবং আদর্শ স্বামী হিসেবে পরিচিত, যিনি কাজ ও পরিবারের মধ্যে সুষম ভারসাম্য রক্ষা করেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও তাঁর নীতিবোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং সহমর্মিতার প্রতিফল

২০১২ সালে জুকারবার্গ তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানী প্রিসিলা চ্যান-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের ঘরে তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে। মানবকল্যাণে অবদানের লক্ষ্যে এই দম্পতি Chan Zuckerberg Initiative প্রতিষ্ঠা করেন, যার মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সমতা নিয়ে কাজ চলছে।


🌐 অবদান ও প্রভাব

মার্ক জুকারবার্গের অবদান আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সমাজের কাঠামোকে এক নতুন দিগন্তে পৌঁছে দিয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি বিশ্ববাসীকে একটি অভূতপূর্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উপহার দিয়েছেন, যেখানে মানুষ শুধু তথ্য ও ছবি বিনিময়ই করছে না, বরং ব্যবসা, শিক্ষা, রাজনীতি ও মানবিক উদ্যোগ পরিচালনা করছে। তাঁর এই প্ল্যাটফর্মটি গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে এক বিপ্লব এনেছে। ফেসবুকের পাশাপাশি ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং অকুলাসের মতো প্রতিষ্ঠানসমূহ অধিগ্রহণের মাধ্যমে তিনি একটি প্রযুক্তিনির্ভর সমন্বিত ইকোসিস্টেম গড়ে তুলেছেন, যা মেটা প্ল্যাটফর্মস-এর অন্তর্ভুক্ত।

২০২১ সালে ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে “Meta” রাখা হয়, যার মূল লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতের ইন্টারনেট তথা Metaverse নির্মাণ— যেখানে ভার্চুয়াল ও বাস্তব পৃথিবীর অভিজ্ঞতা একীভূত হবে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের পাশাপাশি জুকারবার্গ মানবকল্যাণেও সক্রিয়ভাবে অবদান রেখে চলেছেন। “Chan Zuckerberg Initiative” এর মাধ্যমে তিনি শিক্ষা, রোগপ্রতিরোধ, জেনেটিক গবেষণা, এবং সামাজিক সমতা অর্জনের জন্য কাজ করছেন। তাঁর এই উদ্যোগ প্রযুক্তি ও সমাজকল্যাণের এক অনন্য সংমিশ্রণ, যা বহু মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাপী তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য তিনি এক অনুপ্রেরণার নাম, যিনি প্রযুক্তিকে কেবল ব্যবসার মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে প্রমাণ করেছেন— প্রযুক্তির প্রকৃত শক্তি মানুষের কল্যাণেই ব্যবহৃত হতে পারে।

  • ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগাযোগের সহজতম প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন।

  • ব্যবসা, রাজনীতি, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার জনপ্রিয় করেছেন।

  • মেটা প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও মেটাভার্স ভিত্তিক ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির রূপরেখা দিয়েছেন।

  • Chan Zuckerberg Initiative-এর মাধ্যমে দারিদ্র্য, রোগ ও বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছেন।

জুকারবার্গ প্রযুক্তির জগতে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। Time ম্যাগাজিন তাঁকে একাধিকবার বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে নির্মিত হয়েছে বিখ্যাত চলচ্চিত্র The Social Network (2010)


🔚 উপসংহার

মার্ক জুকারবার্গ কেবল একজন সফল প্রযুক্তি উদ্যোক্তাই নন, তিনি নতুন যুগের সামাজিক ও ডিজিটাল রূপান্তরের রূপকার। তাঁর উদ্ভাবনী চিন্তাধারা এবং নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ও তথ্য প্রবাহের রূপ পরিবর্তন করেছে। তরুণদের জন্য তিনি এক অনুপ্রেরণার নাম, যিনি প্রমাণ করেছেন যে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্যোগ থাকলে অল্প বয়সেই বিশ্বে পরিবর্তন আনা সম্ভব।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0