বিল ক্লিনটন এর জীবনী
বিল ক্লিনটন,জীবনী

বিষয় | বিবরণ |
---|---|
পূর্ণ নাম | উইলিয়াম জেফারসন ক্লিনটন |
জন্ম | ১৯৪৬ সালের ১৯ আগস্ট, হোপ, আর্কানসাস, যুক্তরাষ্ট্র |
পিতামাতা | উইলিয়াম ক্লিনটন (পিতা), রুথ ক্লিনটন (মাতা) |
শিক্ষা | Georgetown University, University of Oxford, Yale Law School |
দাম্পত্য জীবন | হিলারি রডহাম ক্লিনটন (১৯৭৫ সাল থেকে বর্তমান) |
সন্তান | চेलসী ক্লিনটন |
দল | ডেমোক্র্যাটিক পার্টি |
পেশা | রাজনীতিবিদ, আইনজীবী |
মেয়াদী রাষ্ট্রপতি | ১৯৯৩ - ২০০১ |
ভাইস প্রেসিডেন্ট | আল গোর (১৯৯৩-২০০১) |
শৈশব ও শিক্ষা: বিল ক্লিনটন ১৯৪৬ সালের ১৯ আগস্ট আর্কানসাস রাজ্যের হোপ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা, উইলিয়াম ক্লিনটন, ছিলেন একজন ব্যবসায়ী, এবং তার মা রুথ ক্লিনটন ছিলেন একজন পরিবারের সদস্য। ক্লিনটনের শৈশবকাল ছিল অনেক কঠিন, কারণ তার পিতা তাকে শৈশবকালে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তার মা তাকে একা বড় করেছিলেন। তিনি হাই স্কুলে অধ্যয়নকালে সঙ্গীত, বক্তৃতা এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন।
তিনি জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি থেকে তার স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং তারপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, যেখানে তিনি একটি রোডস স্কলার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে, তিনি ইয়েল ল স্কুল থেকে আইন বিভাগে ডিগ্রি লাভ করেন।
রাজনৈতিক জীবন: বিল ক্লিনটন ১৯৭০-এর দশকে আর্কানসাস রাজ্যে রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি আর্কানসাসের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৮ সালে আর্কানসাস রাজ্যের গভর্নর হন। ১৯৮০ সালে তিনি গভর্নরের পদ হারালেও ১৯৮২ সালে পুনরায় গভর্নর নির্বাচিত হন এবং দীর্ঘ সময় ধরে আর্কানসাসের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়: ১৯৯২ সালে, ক্লিনটন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন incumbent প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশ এবং আন্ডারডগ প্রার্থী রস পেরো। ক্লিনটন "It's the economy, stupid" (অর্থনীতি হল প্রধান) স্লোগান দিয়ে জনগণের মন জয় করেন এবং তিনি ঐ নির্বাচনে বিজয়ী হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে সময়কাল: বিল ক্লিনটন ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৪২তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার প্রশাসনের সময়কার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল:
- অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি: তার সময়কালে যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বেকারত্বের হার কমে আসে। ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো বাজেট উদ্বৃত্ত ঘোষণা করে।
- স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার: ক্লিনটন স্বাস্থ্যসেবা সংস্কারে ব্যাপক চেষ্টা চালান, তবে তা কংগ্রেসে পূর্ণরূপে পাস হয়নি।
- আইন এবং শৃঙ্খলা: তার প্রশাসন অপরাধ ও গ্যাং সহিংসতা কমাতে কয়েকটি আইন প্রণয়ন করে।
স্ক্যান্ডাল ও অভিশংসন: ১৯৯৮ সালে, বিল ক্লিনটন এবং হোয়াইট হাউসের ইন্টর্ন মোনিকা লুইনস্কির মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে একটি কেলেঙ্কারি সৃষ্টি হয়। এই কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে তাকে অভিশংসিত করা হয়, তবে সেনেট তাকে দোষী সাব্যস্ত না করে অব্যাহতি দেয়। এটি তার রাজনৈতিক জীবনকে প্রভাবিত করলেও তার জনপ্রিয়তা তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
পরে জীবন: প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর, বিল ক্লিনটন তার ক্লিনটন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং দারিদ্র্য নির্মূলকরণে কাজ করে। তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডেও অংশ নেন।
পরিবার: বিল ক্লিনটনের স্ত্রী হিলারি রডহাম ক্লিনটনও একজন উল্লেখযোগ্য রাজনীতিবিদ, যিনি ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের একমাত্র সন্তান চেলসী ক্লিনটন, যিনি বর্তমানে একজন লেখক এবং সমাজসেবী।
উপসংহার: বিল ক্লিনটনের রাজনৈতিক জীবন এবং অবদান তাকে একজন অন্যতম সফল এবং জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করে। তার সময়কালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি উন্নত হয়, যদিও তার ব্যক্তিগত জীবন এবং স্ক্যান্ডাল তার বিরুদ্ধে সমালোচনা সৃষ্টি করেছিল।
What's Your Reaction?






