হযরত ইদ্রিস আঃ এর জীবনী
হযরত ইদ্রিস আঃ ,জীবনী

হযরত ইদ্রিস আঃ ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ নবি, যাকে তাওরাত, ইঞ্জিল এবং কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি কলম ব্যবহার করে লেখালেখি শুরু করেছিলেন এবং বিভিন্ন বিজ্ঞান ও শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেছিলেন।
এখানে হযরত ইদ্রিস আঃ এর জন্ম পরিচয় এবং জীবনী ছকের মাধ্যমে বর্ণনা করছি:
হযরত ইদ্রিস আঃ এর জন্ম পরিচয়
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
নাম | ইদ্রিস (আঃ) |
পিতা | ইয়াহিয়া (আঃ) |
মাতা | নাম অজ্ঞাত |
জন্মস্থান | মিসর (বর্তমানে মিশর) |
জন্মকাল | তার জন্মকাল সম্পর্কে সঠিক কোন নির্দিষ্ট তারিখ জানা যায়নি, তবে বলা হয় তিনি আদম আঃ এর পরবর্তী যুগে জন্মগ্রহণ করেন। |
পরিচিতি | তিনি একজন মহান নবি এবং শাস্ত্রজ্ঞ, যিনি আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করতেন। |
হযরত ইদ্রিস আঃ এর পুর্নাঙ্গ জীবনী
জন্ম ও শৈশব
হযরত ইদ্রিস আঃ ছিলেন একজন মহান নবি, যিনি আদম আঃ এর পরবর্তী যুগে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন ইয়াহিয়া আঃ, যিনি একজন মহান নবি ছিলেন। তাঁর শৈশবকাল ছিল অত্যন্ত সাধারণ, তবে তিনি ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ছিলেন।
নবুওয়ত প্রাপ্তি
হযরত ইদ্রিস আঃ কে আল্লাহ্ তায়ালা নবুওয়ত প্রদান করেন এবং তিনি মানুষকে আল্লাহর ইবাদত ও সত্য পথে আহ্বান করেন। তিনি ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি মানুষের মধ্যে লেখালেখি চালু করেন, এবং শাস্ত্রের নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন।
বৈজ্ঞানিক জ্ঞান
হযরত ইদ্রিস আঃ ছিলেন একজন মেধাবী বিজ্ঞানী। তিনি গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, ও অন্যান্য শাস্ত্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। তিনি আল্লাহর রহমতে বিভিন্ন ধরনের শাস্ত্রের উদ্ভাবন করেন, যেমন সংখ্যা গননা এবং কলমের ব্যবহার।
ইবরাহীম আঃ ও নূহ আঃ এর সঙ্গে সম্পর্ক
ইদ্রিস আঃ এর জীবন ও দাওয়াতের কাজ ছিল ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ইবরাহীম আঃ এবং নূহ আঃ এর আগে এবং পরে ধর্মীয় ও সামাজিক দাওয়াত দিয়েছেন।
ইদ্রিস আঃ এর আকাশে উঠা
হযরত ইদ্রিস আঃ সম্পর্কে বলা হয় যে, তিনি আল্লাহর নির্দেশে আকাশে উঠেছিলেন এবং সেখানে তাঁর জীবন শেষ হয়েছিল। কুরআনে সুরা মেরিয়ম (১৯:৫৬-৫৭) এবং সুরা আম্বিয়া (২১:৮৮) এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এটি তাঁর বিশেষ মর্যাদা এবং আল্লাহর নিকট তাঁর স্থানকে নির্দেশ করে।
মৃত্যু
হযরত ইদ্রিস আঃ এর মৃত্যু সম্পর্কে বিভিন্ন মত রয়েছে, তবে অধিকাংশ ইসলামী ঐতিহাসিকরা বিশ্বাস করেন যে, তিনি জীবিত অবস্থায় আকাশে উঠেছিলেন এবং সেখানে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর তিনি একজন মহান নবি হিসেবে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
অবদান
হযরত ইদ্রিস আঃ এর জীবনের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল তাঁর শিক্ষা ও জ্ঞানের প্রসার। তিনি একদিকে যেমন ধর্মীয় দাওয়াত দিয়েছেন, তেমনি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অবদান রেখে গেছেন। তাঁর রেখে যাওয়া শিক্ষা এবং মানবতা অর্জন ছিল এক মহা ঐতিহ্য।
এছাড়াও, হযরত ইদ্রিস আঃ কে ইসলামে অন্যতম সম্মানিত নবি হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাঁর জীবনের আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান করা হয়।
কুরআনে উল্লেখ
কুরআনের সুরা মেরিয়ম এবং সুরা আম্বিয়াতে তাঁর বিষয়ে কিছু বিশেষ তথ্য উল্লেখ রয়েছে:
-
সুরা মেরিয়ম (১৯:৫৬-৫৭): "এবং ইদ্রিসের কথা স্মরণ কর, তিনি ছিলেন একজন সত্যবাদী ও নবী।"
-
সুরা আম্বিয়া (২১:৮৮): "আমরা তাঁকে আকাশে উঠিয়ে নিই, এক অত্যন্ত উচ্চ আসনে অবস্থান করেন।"
উপসংহার
হযরত ইদ্রিস আঃ ছিলেন এক মহান নবি, যিনি মানবজাতিকে সত্য, ন্যায্যতা এবং শিক্ষার পথে পরিচালিত করেছেন। তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে আমরা শিখতে পারি যে, আল্লাহর পথে চলতে হলে, ধর্মীয় চেতনা এবং জ্ঞান অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
What's Your Reaction?






