শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী

শৈশব ও শিক্ষা

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার ছিল নিম্ন-মধ্যবিত্ত, ফলে শৈশব থেকে তাঁকে অর্থকষ্টের মধ্যে বড় হতে হয়েছে। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেও আর্থিক কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি।

সাহিত্যজীবনের সূচনা

শরৎচন্দ্র তাঁর সাহিত্যজীবন শুরু করেন ছোটগল্প ও উপন্যাস লেখার মাধ্যমে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস "বড়দিদি"। তবে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক হয়ে ওঠেন "দেবদাস", "শ্রীকান্ত", "চরিত্রহীন" ইত্যাদি উপন্যাসের মাধ্যমে। তাঁর লেখাগুলো সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, প্রেম, নারীর অবস্থা এবং সামাজিক বাস্তবতাকে গভীরভাবে উপস্থাপন করে।

উপন্যাস ও সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য

শরৎচন্দ্রের সাহিত্য বাস্তবতাভিত্তিক, যেখানে সমাজের অন্যায়-অবিচার, নারীর প্রতি বৈষম্য এবং মানবিক সম্পর্কের জটিলতা ফুটে ওঠে। তাঁর লেখা "দেবদাস" প্রেম, হতাশা ও আত্মবিনাশের করুণ চিত্র তুলে ধরে, যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত ও চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে।

সমাজ সংস্কার ও প্রভাব

শরৎচন্দ্র কেবল একজন সাহিত্যিকই ছিলেন না, তিনি একজন সমাজ সংস্কারকও ছিলেন। নারীর অধিকার, বাল্যবিবাহ, বিধবা বিবাহ এবং সাম্প্রদায়িক সমস্যা নিয়ে তাঁর লেখায় প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যায়। তাঁর উপন্যাস "পথের দাবী" স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনাকে উজ্জীবিত করেছিল, যা ব্রিটিশ সরকার নিষিদ্ধ করেছিল।

মৃত্যু ও উত্তরাধিকার

১৯৩৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি কলকাতায় মারা যান। তবে তাঁর সাহিত্য এখনও পাঠকদের মনে জীবন্ত, এবং তাঁর লেখা বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।

আপনি শরৎচন্দ্রের কোন বিশেষ উপন্যাস বা দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান?