জহির রায়হানের জীবনী
জহির রায়হান, জীবনী

বিষয় | তথ্য |
---|---|
পূর্ণ নাম | জহির রায়হান (Zahir Raihan) |
জন্ম | ১৯ আগস্ট ১৯৩৫ |
জন্মস্থান | মজুপুর, ফেনী, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) |
পিতা | মফিজুর রহমান |
মাতা | সিদ্দিকা খানম |
শিক্ষা | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক |
পেশা | লেখক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সাংবাদিক |
বিখ্যাত উপন্যাস | হাজার বছর ধরে, আরেক ফাল্গুন, বরফ গলা নদী, শেষ বিকেলের মেয়ে |
বিখ্যাত চলচ্চিত্র | জীবন থেকে নেয়া, স্টপ জেনোসাইড, কাঁচের দেয়াল |
সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের বৈশিষ্ট্য | বাস্তববাদ, রাজনৈতিক চেতনা, সামাজিক সমস্যা ও মুক্তিযুদ্ধের চিত্রায়ণ |
পুরস্কার ও স্বীকৃতি | একুশে পদক (মরণোত্তর), স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) |
মৃত্যু/নিখোঁজ | ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২ (নিখোঁজ) |
মৃত্যুর স্থান | ঢাকা, বাংলাদেশ (রাজাকারদের হাতে অপহৃত) |
শৈশব ও শিক্ষা
জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কেটেছে বিভিন্ন স্থানে, কারণ তাঁর পরিবার বারবার স্থান পরিবর্তন করত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং শিক্ষাজীবন থেকেই সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন।
সাহিত্য ও লেখক জীবন
জহির রায়হান একজন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও সাংবাদিক ছিলেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস "সূর্যগ্রহণ" প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। এরপর তিনি লিখেছেন "হাজার বছর ধরে", "আরেক ফাল্গুন", "বরফ গলা নদী", "শেষ বিকেলের মেয়ে"-র মতো কালজয়ী উপন্যাস। তাঁর সাহিত্যকর্মে সমাজের বাস্তবচিত্র, রাজনৈতিক চেতনা এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
চলচ্চিত্র নির্মাণ
সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র জগতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং অত্যন্ত সফলতা অর্জন করেন। তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্র "জীবন থেকে নেয়া" (১৯৭০) বাংলা চলচ্চিত্রের এক অনন্য সৃষ্টি, যা রাজনৈতিক রূপকের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী সমাজব্যবস্থা ও আন্দোলনের চিত্র তুলে ধরে।
তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য প্রামাণ্যচিত্র "স্টপ জেনোসাইড" নির্মাণ করেন, যা পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছিল।
মুক্তিযুদ্ধ ও নিখোঁজ হওয়া
জহির রায়হান মুক্তিযুদ্ধের সময় সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। তাঁর ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও রাজাকাররা অপহরণ করেছিল। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনি নিখোঁজ ভাইকে খুঁজতে বের হন এবং সেদিনই রাজাকারদের হাতে অপহৃত হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উত্তরাধিকার ও প্রভাব
জহির রায়হান শুধু একজন সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন জাতির এক মহান কণ্ঠস্বর। তাঁর সাহিত্য ও চলচ্চিত্র আজও বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার মানুষদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁর স্মরণে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
আপনি কি তাঁর কোনো নির্দিষ্ট উপন্যাস বা চলচ্চিত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান?
What's Your Reaction?






