সেলিম আল দীন এর জীবনী
সেলিম আল দীন, জীবনী

বিষয় | তথ্য |
---|---|
পূর্ণ নাম | সেলিম আল দীন |
জন্ম | ১৮ আগস্ট ১৯৪৯ |
জন্মস্থান | চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ |
পিতা | মোহাম্মদ আলী |
মাতা | মাওলা বেগম |
শিক্ষা | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (থিয়েটার ও নাট্যকলা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলা সাহিত্য) |
পেশা | নাট্যকার, লেখক, নির্দেশক, শিক্ষক |
সাহিত্যধারা | নাটক, মঞ্চনাটক, কাল্পনিক বাস্তবতা, আধুনিকতা |
প্রধান নাটক | কুহেলিকা, গণদাবী, পিঠিপাজি, সিরাজউদ্দৌলা |
প্রধান গদ্যগ্রন্থ | নাটকের ইতিহাস |
প্রাপ্ত পুরস্কার | বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৫), একুশে পদক (২০০৪) |
মৃত্যু | ১৪ জানুয়ারি ২০০৮ |
মৃত্যুস্থান | ঢাকা, বাংলাদেশ |
জন্ম ও শিক্ষা
সেলিম আল দীন ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থিয়েটার ও নাট্যকলা এবং বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি নাটকের প্রতি আগ্রহী ছিলেন এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নাট্যচর্চার প্রতি তার ভালোবাসা আরও গভীর হয়।
সাহিত্যকর্ম ও অবদান
সেলিম আল দীন ছিলেন বাংলাদেশের নাট্যচর্চার অন্যতম পুরোধা। তাঁর নাটকগুলি সামাজিক, রাজনৈতিক, এবং মানবিক সংকটের গভীর বিশ্লেষণ করে। তিনি মূলত মঞ্চনাটক লেখক ছিলেন এবং তাঁর নাটকে লোকশিল্প, ঐতিহ্য, এবং আধুনিকতার সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। তিনি একাধারে নাট্যকার, নির্দেশক এবং শিক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে প্রভাব ফেলেছিলেন।
তাঁর প্রধান সাহিত্যকর্ম:
নাটক:
- কুহেলিকা – এই নাটকটি বাংলার সমাজের নৈতিক ও সামাজিক সংকটের প্রতিফলন।
- গণদাবী – এটি মানুষের মৌলিক অধিকার এবং গণতন্ত্রের চিত্রায়ণ করে।
- পিঠিপাজি – মানুষের অস্তিত্ব এবং সমাজের ভেদাভেদ নিয়ে এই নাটকটি আলোচনার জন্য আলোচিত।
- সিরাজউদ্দৌলা – এই নাটকটি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের দৃষ্টিতে জীবনযাত্রার চিত্রায়ণ করে।
গদ্যগ্রন্থ:
- নাটকের ইতিহাস – নাটক ও থিয়েটারের ইতিহাস নিয়ে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ গ্রন্থ।
সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য
- সেলিম আল দীন ছিলেন বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে এক বিশেষ স্থান অধিকারী। তাঁর নাটকে ছিল সমাজের নানা অসঙ্গতির প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া, মানবিক উদ্বেগ এবং বাস্তবতার কঠিন চিত্র।
- তিনি নাটককে জীবনের প্রতিফলন হিসেবে দেখতেন, এবং তাঁর নাটকে সাধারণ মানুষের জীবন ও সংগ্রামের গল্প ফুটে উঠত।
- তাঁর নাটকে সাধারণত লোকশিল্প ও সংস্কৃতির উপাদান যেমন পুতুলনাচ, যাত্রাপালা, মঞ্চনাটকের ঐতিহ্যগত ধরন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পুরস্কার ও সম্মাননা
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৫)
- একুশে পদক (২০০৪) – বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদান রাখার জন্য এই সম্মাননা লাভ করেন।
মৃত্যু
সেলিম আল দীন ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
উপসংহার
সেলিম আল দীন ছিলেন বাংলাদেশের নাট্যজগতের অগ্রগামী একজন নাট্যকার এবং নির্দেশক। তাঁর নাটকগুলি সমাজের সমস্যা ও মানবিক সংকটকে গভীরভাবে উপস্থাপন করে। তার লেখা নাটকগুলো শুধু মঞ্চে নয়, সমাজে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তাঁর অবদান বাংলাদেশের নাট্যকলার ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
What's Your Reaction?






