শহীদ কাদরীর জীবনী
শহীদ কাদরী, জীবনী

বিষয় | তথ্য |
---|---|
পূর্ণ নাম | শহীদ কাদরী |
জন্ম | ১৯৪১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি |
জন্মস্থান | ঢাক, বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) |
পিতা | হাজি মোহাম্মদ আলী |
মাতা | রেহেনা বেগম |
শিক্ষা | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলা সাহিত্য) |
পেশা | কবি, গদ্যলেখক, অনুবাদক |
সাহিত্যধারা | আধুনিক কবিতা, প্রেম, দ্রোহ, সামাজিক বাস্তবতা |
প্রধান কাব্যগ্রন্থ | ভূমিতল, চোখের বৃষ্টি, একাত্তরের কাব্য |
গদ্যগ্রন্থ | উন্মুক্ত পৃথিবী, মুক্তিযুদ্ধের কাব্য |
প্রাপ্ত পুরস্কার | বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৫), একুশে পদক (২০১১) |
মৃত্যু | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ |
মৃত্যুস্থান | ঢাকা, বাংলাদেশ |
জন্ম ও শিক্ষা
শহীদ কাদরী ১৯৪১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশবকাল ছিল দারিদ্র্য ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন এবং তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য পত্রিকা থেকে।
সাহিত্যকর্ম ও অবদান
শহীদ কাদরী ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি, গদ্য লেখক এবং অনুবাদক। তাঁর কবিতার বৈশিষ্ট্য ছিল প্রেম, দ্রোহ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এবং মানুষের মানবিকতা ও সংগ্রাম। তাঁর কবিতায় সাধারণ মানুষের সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের অনুভূতি ফুটে ওঠে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল, যা তাঁর কবিতায় স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
তাঁর প্রধান সাহিত্যকর্ম:
কবিতা:
- ভূমিতল
- চোখের বৃষ্টি
- একাত্তরের কাব্য – এই কাব্যগ্রন্থটি মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা এবং জাতির সংগ্রামের চিত্রায়ণ করে।
গদ্যগ্রন্থ:
- উন্মুক্ত পৃথিবী
- মুক্তিযুদ্ধের কাব্য
সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য
- প্রেম ও দ্রোহ: শহীদ কাদরীর কবিতায় প্রেম এবং দ্রোহের একটি স্বতন্ত্র সংমিশ্রণ ছিল। তিনি তাঁর কবিতায় প্রেমের গভীরতা, সমাজের অসঙ্গতি এবং শোষিত মানুষের প্রতি প্রতিবাদ প্রকাশ করেছেন।
- মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব: তাঁর কবিতার এক বড় অংশ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এবং অনুভূতির ওপর ভিত্তি করে রচিত। বিশেষ করে "একাত্তরের কাব্য" কবিতাগ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতা এবং জাতির মুক্তির সংগ্রাম ফুটে উঠেছে।
- মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি: শহীদ কাদরী ছিলেন একজন মানবতাবাদী কবি, যার কবিতায় মানুষের কষ্ট, সংগ্রাম ও মুক্তির চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৫)
- একুশে পদক (২০১১) – ভাষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য তিনি এই সম্মাননা লাভ করেন।
মৃত্যু
শহীদ কাদরী ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যু বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনে এক গভীর শোকের সৃষ্টি করে।
উপসংহার
শহীদ কাদরী ছিলেন আধুনিক বাংলা কবিতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর কবিতা মানুষের যন্ত্রণা, সংগ্রাম, প্রেম ও দ্রোহের একটি নির্ভীক চিত্র। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনুভূতি তাঁর কবিতায় চিরকালীন একটি স্থান পেয়েছে। শহীদ কাদরীর সাহিত্যকর্ম আজও পাঠকদের অনুপ্রাণিত করে এবং বাংলা সাহিত্যকে একটি নতুন দিগন্তে পৌঁছেছে।
What's Your Reaction?






