অতুলচন্দ্র গুপ্তের জীবনী

অতুলচন্দ্র গুপ্তের জীবনী

May 27, 2025 - 23:38
 0  0
অতুলচন্দ্র গুপ্তের জীবনী

ক্রমিক বিষয় তথ্য
পূর্ণ নাম অতুলচন্দ্র গুপ্ত
জন্ম ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দ
জন্মস্থান বরিশাল, তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
পেশা সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ইতিহাসবিদ, অনুবাদক
প্রধান পরিচিতি প্রাচীন বাংলার ইতিহাস গবেষণা ও অনুবাদ কাজের জন্য
উল্লেখযোগ্য কাজ "বাংলার ইতিহাস", "সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস", বহু গ্রন্থ অনুবাদ
সাহিত্যধারা ইতিহাসভিত্তিক রচনা, অনুবাদ সাহিত্য
অবদান বাংলা ভাষায় ঐতিহাসিক গবেষণা, বাংলা সাহিত্যে ঐতিহাসিক চেতনা জাগরণ
মৃত্যু ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ
১০ মৃত্যুর স্থান কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

জন্ম ও শৈশবকাল

অতুলচন্দ্র গুপ্ত ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পূর্ববঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মস্থান ছিল বাংলাদেশের কুমিল্লা বা এর আশপাশের অঞ্চল। শৈশবকাল থেকেই তিনি ছিলেন জ্ঞানপিপাসু ও সাহিত্যপ্রেমী। প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন নিজ এলাকার বিদ্যালয়ে এবং পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।


শিক্ষা ও পেশাগত জীবন

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ইতিহাস এবং সাহিত্য বিষয়ক পড়াশোনা করেন। তাঁর পাণ্ডিত্য এবং অনুসন্ধিৎসু মনোভাব তাঁকে ধীরে ধীরে একজন গবেষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তোলে। তিনি বাংলা ভাষায় বহু ঐতিহাসিক প্রবন্ধ, অনুবাদ, ও সাহিত্য সংকলন প্রকাশ করেন। তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল প্রাচীন ভারতের ইতিহাস, বৌদ্ধ ধর্ম, ও সংস্কৃতি নিয়ে।


সাহিত্যিক ও গবেষণামূলক কাজ

অতুলচন্দ্র গুপ্ত ইতিহাসচর্চায় গভীর অবদান রেখেছেন। বাংলা ভাষায় ইতিহাসকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ভারতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থ অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করেন। তাঁর অনুবাদ ছিল সুস্পষ্ট, প্রাঞ্জল, ও তথ্যনির্ভর। বিশেষত পালি ভাষা থেকে অনুবাদে তিনি দক্ষতা দেখিয়েছেন।

তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু কাজ:

  • বৌদ্ধ ধর্ম ও সাহিত্য (মূলত ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পাঠ্য)

  • ভারতের প্রাচীন ইতিহাস (বিশ্লেষণধর্মী রচনা)

  • বিভিন্ন প্রাচীন পাণ্ডুলিপির অনুবাদ ও টীকাভাষ্য


ভূমিকা ও অবদান

অতুলচন্দ্র গুপ্ত বাংলা ভাষায় ইতিহাস ও ধর্মতত্ত্ব চর্চায় একটি নতুন ধারা সূচনা করেন। পন্ডিতদের কাছে তাঁর কাজ ছিল অমূল্য সম্পদ। বাংলা ভাষায় যেসব ঐতিহাসিক গ্রন্থ শিক্ষার্থীদের জন্য সহজবোধ্যভাবে রচিত হয়েছে, তার অন্যতম রচয়িতা ছিলেন তিনি।

তিনি শুধুমাত্র গবেষক বা অনুবাদক নন, এক অর্থে শিক্ষাবিস্তারের এক নীরব সৈনিক ছিলেন। বাংলা ভাষাভাষী জনগণের কাছে ইতিহাসচর্চাকে জনপ্রিয় করে তোলাই ছিল তাঁর অন্যতম লক্ষ্য।


উপসংহার

১৯৬৭ সালে অতুলচন্দ্র গুপ্ত পরলোকগমন করেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়। তবে তাঁর কর্ম ও রচনা আজও শিক্ষার্থীদের, গবেষকদের ও ইতিহাসপ্রেমীদের মধ্যে প্রেরণা জোগায়।

তাঁর জীবন ছিল নিরলস পরিশ্রম, সাধনা ও জ্ঞানচর্চার প্রতিচ্ছবি। অতুলচন্দ্র গুপ্ত আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংরক্ষক হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0