জিওফ্রে চসার এর জীবনী

জিওফ্রে চসার, জীবনী

Mar 23, 2025 - 14:07
Mar 24, 2025 - 01:39
 0  0
জিওফ্রে চসার এর জীবনী

বিষয় বিবরণ
পূর্ণ নাম জিওফ্রে চসার (Geoffrey Chaucer)
জন্ম আনুমানিক ১৩৪৩ খ্রিস্টাব্দ
জন্মস্থান লন্ডন, ইংল্যান্ড
পেশা কবি, লেখক, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা
বিখ্যাত রচনা ক্যানটারবেরি টেইলস (The Canterbury Tales), দ্য হাউস অফ ফেম (The House of Fame)
সাহিত্যিক ধারা ইংরেজি সাহিত্যের প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগীয় সাহিত্য
ভাষা ইংরেজি
মৃত্যু ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ (প্রায়)
মৃত্যুস্থান উইম্বলডন, ইংল্যান্ড

প্রারম্ভিক জীবন

জিওফ্রে চসার ইংল্যান্ডের লন্ডনে ১৩৪৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ছিল মধ্যবিত্ত, এবং তাঁর পিতা ছিল একজন মদ ব্যবসায়ী। চসারের শৈশবকাল অজানা, তবে তিনি একটি ভাল শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন এবং তাকে রাজকীয় আদালতে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যা তার সাহিত্যিক কর্মের জন্য সহায়ক হয়েছিল।

রাজনৈতিক জীবন ও প্রশাসনিক কাজ

চসার বেশ কিছু রাজকীয় প্রশাসনিক পদে কাজ করেছিলেন। তিনি রাজস্ব বিভাগের কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন সময় রাজকীয় দূত হিসেবে অন্যান্য দেশে পাঠানো হয়েছিল। রাজনীতির প্রতি তার আগ্রহ এবং সামাজিক জীবন তাঁর সাহিত্যকর্মের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

বিখ্যাত রচনা: "ক্যানটারবেরি টেইলস" (The Canterbury Tales)

ক্যানটারবেরি টেইলস চসারের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং গুরুত্বপূর্ণ রচনা। এটি একটি কবিতার সংকলন যা ৩০টি গল্প নিয়ে গঠিত, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ একত্রিত হয়ে ক্যানটারবেরি শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং পথে একে অপরকে গল্প শোনায়। এই গল্পগুলির মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং নৈতিক প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে, যা মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের সংস্কৃতি এবং সমাজের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র প্রদান করে।

ক্যানটারবেরি টেইলস ইংরেজি সাহিত্যের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ইংরেজি কাব্যকে একটি নতুন রূপে উপস্থাপন করেছে। এতে চসারের বিদ্রূপাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানবিক প্রকৃতির প্রতি তার গভীর পর্যবেক্ষণ প্রকাশ পায়।

আরো কিছু রচনা

১. দ্য হাউস অফ ফেম (The House of Fame): এটি একটি দীর্ঘ কবিতা, যা খ্যাতি ও গৌরব অর্জনের বিষয়ে আলোচনা করে।
২. দ্য পার্লামেন্ট অফ ফাউলস (The Parliament of Fowls): এটি একটি বুদ্ধিদীপ্ত কবিতা, যা প্রেম এবং বিবাহের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাদের পরিণতি তুলে ধরে।

সাহিত্যিক অবদান

চসার ইংরেজি সাহিত্যের প্রথম সার্থক কবি ছিলেন যিনি মাতৃভাষায় একাধিকার মহাকাব্য রচনা করেছিলেন। তার কাব্যশৈলীতে প্রাচীন ফরাসি এবং লাতিন সাহিত্য থেকে প্রভাব ছিল, তবে তিনি ইংরেজি ভাষাকে সাহিত্যিক ও প্রকাশনীয় উপায় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর রচনাগুলি শুধুমাত্র সাহিত্যিক দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ নয়, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় জীবনের একটি ব্যাখ্যা প্রদান করেছে।

ইংরেজি সাহিত্যে পরিবর্তন

চসারের কাজ ইংরেজি ভাষার একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল, যা পরবর্তী শতাব্দীর সাহিত্যকর্মের জন্য এক নতুন মাইলফলক তৈরি করে। ক্যানটারবেরি টেইলস একদিকে যেমন ইংল্যান্ডের সমাজের দুর্দশা ও বাস্তবতা তুলে ধরে, তেমনি অন্যদিকে এটি সাহিত্যকে একটি শক্তিশালী সামাজিক অভিব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

মৃত্যু ও পরবর্তী প্রভাব

চসার ১৪০০ সালে মারা যান, তবে তার সাহিত্যকর্ম দীর্ঘকাল ধরে ইংল্যান্ডের সাহিত্যের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তার রচনা প্রজন্মের পর প্রজন্মের লেখকদের অনুপ্রাণিত করেছে। ক্যানটারবেরি টেইলস এখনো বিশ্ব সাহিত্য পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত এবং তার চরিত্রগুলি আধুনিক সাহিত্যেও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

উপসংহার

জিওফ্রে চসার ছিল ইংরেজি সাহিত্যের একজন অগ্রগামী কবি, যিনি ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মুক্ত করেছিলেন। তার রচনা শুধু সাহিত্যিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, তা মানুষের মনস্তত্ত্ব, সমাজ, ধর্ম এবং নৈতিকতার গভীর বিশ্লেষণ করে। ক্যানটারবেরি টেইলস তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে আজও সাহিত্য ও শিক্ষার অমূল্য অংশ হয়ে আছে।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0