জন মিলটন-এর জীবনী
জন মিলটন, জীবনী

বিষয় | তথ্য |
---|---|
পূর্ণ নাম | জন মিলটন (John Milton) |
জন্ম | ৯ ডিসেম্বর ১৬০৮, লন্ডন, ইংল্যান্ড |
পিতা | জন মিলটন সিনিয়র (John Milton Sr.) |
মাতা | সারাহ জেফ্রি (Sarah Jeffrey) |
শিক্ষা | ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় (ক্রাইস্ট কলেজ) |
পেশা | কবি, প্রাবন্ধিক, রাজনৈতিক চিন্তাবিদ |
প্রধান সাহিত্যকর্ম | কাব্যগ্রন্থ: "Paradise Lost", "Paradise Regained", "Samson Agonistes" প্রবন্ধ: "Areopagitica" |
ভাষা | ইংরেজি, লাতিন, গ্রিক, হিব্রু |
রাজনৈতিক ভূমিকা | ইংল্যান্ডের অলিভার ক্রমওয়েলের শাসনামলে সরকারপক্ষের লেখক |
চোখের দৃষ্টিশক্তি | ১৬৫২ সালে সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যান |
মৃত্যু | ৮ নভেম্বর ১৬৭৪, লন্ডন, ইংল্যান্ড |
শৈশব ও শিক্ষা:
জন মিলটন ১৬০৮ সালের ৯ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাইস্ট কলেজ থেকে। ছোটবেলা থেকেই তিনি ভাষা ও সাহিত্যচর্চায় গভীরভাবে মনোনিবেশ করেন এবং ইংরেজি ছাড়াও লাতিন, গ্রিক ও হিব্রু ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন।
প্রাথমিক সাহিত্যকর্ম ও কবিতা:
তিনি প্রথম দিকে ছোট ছোট কবিতা লিখলেও তার প্রকৃত খ্যাতি আসে মহাকাব্যের মাধ্যমে। তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক কবিতা হলো—
- L'Allegro (১৬৪৫)
- Il Penseroso (১৬৪৫)
- Lycidas (১৬৩৭) – এটি তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ এলিগি (শোকগাথা), যা তার বন্ধুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে লেখা।
রাজনীতি ও দর্শন:
১৬৪০-এর দশকে ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের সময় তিনি অলিভার ক্রমওয়েলের সমর্থক ছিলেন। রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তিনি "Areopagitica" (১৬৪৪) নামক বিখ্যাত প্রবন্ধটি লিখেছিলেন, যা আজও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।
Paradise Lost – মহাকাব্য ও খ্যাতি:
১৬৬৭ সালে তিনি তার সবচেয়ে বিখ্যাত মহাকাব্য "Paradise Lost" প্রকাশ করেন। এটি দ্বাদশ খণ্ডের একটি মহাকাব্য, যেখানে আদম ও ইভের স্বর্গচ্যুতি, শয়তানের বিদ্রোহ, ও মানবজাতির পতনের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। এই কাব্য তার অসাধারণ কল্পনাশক্তি, গভীর ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নাটকীয়তা দ্বারা আজও সমাদৃত।
পরবর্তীতে, তিনি "Paradise Regained" (১৬৭১) রচনা করেন, যেখানে যিশু খ্রিস্টের বিজয়গাথা বর্ণিত হয়েছে।
চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানো ও সাহিত্যচর্চা:
১৬৫২ সালে জন মিলটন সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যান। তবে অন্ধত্ব তার সাহিত্যসৃষ্টি থামিয়ে রাখতে পারেনি। তিনি তার সাহিত্যের জন্য সহকারী বা কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে তার চিন্তাগুলো লিপিবদ্ধ করতেন।
মৃত্যু ও উত্তরাধিকার:
৮ নভেম্বর ১৬৭৪ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার লেখা ইংরেজি সাহিত্য ও বিশ্বসাহিত্যে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। তিনি শুধু একজন কবিই নন, বরং একজন রাজনৈতিক দার্শনিকও ছিলেন, যিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নৈতিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
উপসংহার:
জন মিলটন ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ও দার্শনিক লেখক। তার "Paradise Lost" এখনো মহাকাব্যের সেরা উদাহরণগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। দৃষ্টিহীনতা সত্ত্বেও তার সৃষ্টিশীলতা ও সাহিত্যপ্রতিভা অবিস্মরণীয়।
What's Your Reaction?






