হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা :) এর জিবনী
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা :) , জিবনী

নিশ্চয়ই! নিচে সাহাবি হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) এর জন্ম পরিচয় ছক আকারে এবং তারপর তাঁর পূর্ণাঙ্গ জীবনী বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো।
🌿 হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) – জন্ম পরিচয় (ছক আকারে)
বিষয় | তথ্য |
---|---|
পূর্ণ নাম | আনাস ইবনে মালিক ইবনুন নাযর আনসারী খাযরাজী |
উপাধি | খাদিমে রাসূল (সা.) |
পিতা | মালিক ইবনে নাযর |
মাতা | উম্মে সুলাইম (রাঃ) |
জন্মস্থান | ইয়াসরিব (বর্তমানে মদীনা) |
জন্মসাল | হিজরতের প্রায় ১০ বছর পূর্বে (আনুমানিক 612 খ্রিষ্টাব্দ) |
গোত্র | খাযরাজ, বনু আন-নাজ্জার |
ইসলাম গ্রহণ | শিশুকালেই ইসলাম গ্রহণ করেন |
নবীজীর সঙ্গে সময় | প্রায় ১০ বছর রাসূল (সা.)-এর খেদমতে ছিলেন |
মৃত্যু | হিজরি ৯৩ সন (প্রায় ১০৩ বছর বয়সে) |
মৃত্যুর স্থান | বসরা, ইরাক |
📜 হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) – পূর্ণাঙ্গ জীবনী
✅ ইসলাম গ্রহণ ও প্রারম্ভিক জীবন
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) জন্মগ্রহণ করেন মদীনায়। তাঁর মা উম্মে সুলাইম (রাঃ) ছিলেন একজন সাহসী ও অগাধ বিশ্বাসের অধিকারী মহিলা। হযরত আনাস ছোটবেলায়ই ইসলাম গ্রহণ করেন তাঁর মায়ের মাধ্যমে। তাঁর বাবা ইসলাম গ্রহণ করেননি এবং তরুণ বয়সেই মারা যান।
যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) হিজরত করে মদীনায় আগমন করেন, তখন আনাসের মা তাঁকে নবীজীর খিদমতে উপহার দেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। তিনি দশ বছর ধরে রাসূল (সা.)-এর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী এবং খেদমতকারী হিসেবে কাজ করেন।
✅ নবীজীর খেদমত
আনাস (রাঃ) বলেন:
"আমি দশ বছর ধরে রাসূল (সা.)-এর খেদমত করেছি। তিনি কখনো আমাকে 'উহ্' পর্যন্ত বলেননি। কখনো বলেননি, কেন এটা করেছ বা কেন এটা করোনি।"
[সহীহ বুখারী]
তিনি নবীজীর নিকট থেকে আধ্যাত্মিক, নৈতিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নবীজীর ঘনিষ্ঠ সাহাবিদের অন্যতম, যার মাধ্যমে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
✅ হাদীস বর্ণনা
হযরত আনাস (রাঃ) প্রায় ২,৮৬০+ হাদীস বর্ণনা করেছেন, যা তাঁকে অন্যতম বহুল হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবি হিসেবে গণ্য করেছে। তিনি সাহাবিদের মধ্যে অন্যতম দীর্ঘজীবী ছিলেন এবং বহু তাবেঈ তাঁর নিকট থেকে হাদীস শুনেছেন।
✅ যুদ্ধ ও খিলাফতের যুগে ভূমিকা
তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় বিভিন্ন গাযওয়া ও সিরিয়ায় অংশ নিয়েছেন। নবীজীর ওফাতের পর খিলাফতে রাশেদার যুগে, বিশেষ করে খলীফা উমর (রাঃ), উসমান (রাঃ) এবং আলী (রাঃ)-এর সময়েও তিনি ইলম ও দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যান। পরবর্তীতে বসরায় চলে যান এবং সেখানেই অবস্থান করেন।
✅ মৃত্যু
হযরত আনাস (রাঃ) হিজরি ৯৩ সনে বসরায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স ছিল প্রায় ১০৩ বছর। তাঁর কবর বসরা শহরেই রয়েছে।
🏆 বিশেষ বৈশিষ্ট্য
-
রাসূল (সা.) তাঁর জন্য দোয়া করেছিলেন: “হে আল্লাহ! তাকে সম্পদ দাও, সন্তান দাও এবং তার জীবনে বরকত দাও।”
-
তিনি বহু সন্তান লাভ করেন এবং তাঁর উত্তরসূরিদের সংখ্যা ছিল শতাধিক।
-
তিনি ছিলেন সবচেয়ে দীর্ঘজীবী সাহাবিদের একজন।
আরও জানতে চাও বা তাঁর বর্ণিত কিছু প্রসিদ্ধ হাদীস শুনতে চাও? 😊
What's Your Reaction?






